পটল চাষ পদ্ধতি - হাইব্রিড পোটল চাষ
ভূমিকা
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজ করে। কৃষি জমিতে যে
সকল শাক- সবজি চাষ করে এর মধে পটল চাষ করা অন্যতম। পটল চাষ করে চাষিরা অনেক
লাভবান হয়ে থাকে। তাই বর্তমানে পটল চাষে কৃষকরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আগ্রহী হয়ে
উঠছে। অনেকে পটল চাষের সময়, পটলের চারা কোথায় পাওয়া যায়, পটলের ফলন বৃদ্ধির
উপায়,হাইব্রিড পোটল চাষ পদ্ধতি ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে চাইছেন। তাই এই আর্টিকেলের
মধ্যে পটল চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
পটল চাষের সময়
বসন্ত ও গীষ্মকাল হলো পটল চাষের জন্য উপযুক্ত সময়। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস
পর্যন্ত পটলের বীজ বপন করা হয়। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে মাটির গুনগত মান ও আবহাওয়া
অনুযায়ী জুলাই-আগষ্ট মাসেও পটল চাষ করা যেতে পারে। তবে সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাস
থেকে শুরু করে এপ্রিল পর্যন্ত পটলের বীজ বোপন করার সবথেকে ভালো সময়।
চারা কোথায় পাওয়া যাবে পটলের
পোটল চাষের জন্য সর্বপ্রথম পটলের চারা সংগ্রহ করা প্রয়োজন। সুস্থ্য-সবল চারা
বাছাই করে সেগুলো সংগ্রহ করে রাখা অনেক জরুরী। পটলের চারা বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া
যেতে পারে।সাধারণত যেসকল অঞ্চলে পোটলের চারা পাওয়া যায় তা হলো:
স্থানীয় কৃষি বাজার: স্থানীয় কৃষি বাজার বা হাটে পটলের চারা বিক্রয় করা
হয়। গ্রামের কৃষি বাজারে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পটলের চারা বিক্রি করে থাকে।
কৃষি প্রশিক্ষন কেন্দ্র: বিভিন্ন এনজিও বা সরকার কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন
কৃষি প্রশিক্ষন কেন্দ্রে পটলের চারা পাওয়া যায়।
নার্সারি: স্থানীয় নার্সারিগুলোতে পটলের চারা সহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও
ফল মূলের চারা পাওয়া যায়।
কৃষি অফিস: স্থানীয় কৃষি অফিস থেকেও বিভিন্ন ধরনের চারা পাওয়া যায়।
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে পটলের চারা পাওয়া যায়।
অনলাইন প্লাটফ্রম: বর্তমানে অনলাইন প্লাটফ্রমে বিভিন্ন ধরনের চারা বিক্রি
করে থাকে। সেখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় পটলের চারা অর্ডার করলে আপনার ঠিকানায়
চারা পৌছে দিবে।
পটলের বীজ থেকে চারা উৎপাদন
পটলের বীজ থেকে চারা উৎপাদনের সঠিক নিয়ম জানা থাকলে অনেক ভালো মানের চারা উৎপাদন
করা সম্ভব। এই ক্ষেত্রে উচ্চ ফলনশীল বীজ নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বীজ
নির্বাচন করার পরে বীজ শোধনের জন্য 1%ব্যাভিষ্টিন বা ক্যাপ্টান দ্রবনে 15-20
মিনিট ভালোভাবে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর মাটি নির্বাচন করে বীজতলা তৈরি করে নিতে
হবে।
3-৪ ফুট প্রসস্ত ও 1 ফুট গভীর উচু বেড তৈরি করতে হবে। বেডের দৈর্ঘ্য আপনার
প্রয়োজন অনুযায়ী রাখতে পারেন। এরপর বীজতলায় 1 থেকে 1.5 সে. মি গভীরে 2-৩ ইঞ্চি
দূরত্বে বীজ বপন করে হালকা মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। বীজ বপনের পর হালকা সেচ দিতে
হবে।
আরো পড়ুনঃ দেশি মুরগি মাংশের উপকারিতা কী
এরপর ৭-১০ দিনের মধ্যে বীজ থেকে চারা অঙ্করিত হবে। চারাগুলোতে যেন অতিরিক্ত
সূর্যের তাপ না লাগে। সেই দিকে লক্ষ রেখে ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ২০-২৫ দিন
বয়স পরে হালকা ডিএপি, ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। এরপর ২৫-৩০ দিন বয়স হলে আপনি
চারাগুলো মূল জমিতে নিয়ে চাষ করতে পারবেন।
পটল চাষ করার পদ্ধতি
পটল চাষ সাধারণত একটি প্রথাগত সবজি চাষ। পটল চাষের জমি ভালো করে চাষ ও মই দিয়ে
আগাছামুক্ত করে মাটিগুলো ঝুরঝুরে করে মাটি সমান নিতে হবে। বেড পদ্ধতিতে পটলের
চারা বপন করে থাকি। পটলের চারার বেডগুলো সাধারণত ১.০-১.৫ মিটার হয়ে থাকে। পটল
চারার মাচাগুলো সাধারণত সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করতে হয়।
পটলের ফলন বৃদ্ধির উপায়
পটলের চারায় সঠিক সময়ে সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। এরফলে পটলের ফলন
বৃদ্ধি পাওয়া যাবে। পটল চারার জন্য মাটি ভালোভাবে চাষ করে নিতে হবে। পটলের বীজ
ও চারার গুণগত মান ভালো হতে হবে। রাসায়নিক উপায়েও পটলের ফলন বৃদ্ধি করা যায়।
হাইব্রিড পটল চাষ পদ্ধতি
হাইব্রিড পটল চাষ হলো একটি উন্নত পদ্ধতি। এটি মূলত জাতের তুলনায় ফলন বৃদ্ধি
পায়। এবং হাইব্রিড জাতের পটলের চারাগুলোর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি থাকে।
ফলে হাইব্রিড জাতের পটল চাষ করে ফলন বেশি পাওয়া যায়।
লেখকের মন্তব্য
বর্তমানে আগের তুলনায় এখন পটল চাষের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে অনেকেই
জানেনা পটল চাষ কিভাবে করতে হয়। তাই পটল চাষীরা অনেকেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।
ফলে চাষিরা ঋনগ্রস্থ হয়ে পড়ছে।
আমাদের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url